ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান’ 


গো নিউজ২৪ | মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি  প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০১৮, ০৩:৫১ পিএম আপডেট: আগস্ট ১, ২০১৮, ১০:০৩ এএম
‘আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান’ 

ছবিতে যে বৌকে দেখছেন সে আমার বোন আর বোনের সাথে তার স্বামী। আর তার স্বামীর সাথে যে হিজাব পরা মেয়েটিকে দেখছেন, সে তার সর্বশেষ প্রেমিকা।

তাদের কথপোকথনের এমন এমন স্ক্রিনশট আমি পেয়েছি যে ফেসবুকে দেয়ার সাহস আমার নেই। কোথা থেকে কথা শুরু করবো বুঝতে পারছি না। ঘটনা নয় বছর ধরে চললেও আমি প্রকাশ্যে কথা বলা শুরু করেছি গত এপ্রিল থেকে, বোনের অসম্মতি থাকা সত্ত্বেও, আমি আর পারছিলাম না।

অবশেষে এতো বছর, এতো দিন পর আমার বোন শক্ত হল। দেয়ালে শুধু তার পিঠ ঠেকেনি, যখন রাস্তাঘাটে মার খেতে খেতে তার পিঠ ভাঙা শুরু হল তখন নিজের শেষ রক্ষা করার জন্য সে অবশেষে আইনের দ্বারস্থ হল। যেমনটি আগের থেকেই আন্দাজ করেছিলাম আমরা, এই মামলাটি নারী নির্যাতনের হলেও যথেষ্ট গাফলতি হবে, যেহেতু পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার বোনের স্বামীর পূর্বপরিচিত। এর আগেও এফআইআর করতে গেলে উনারা রাখেননি প্রমাণ ও মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া।এবার অনেক ঘোরানোর পর কেইসটি রাখলেও সাথে সাথেই ফোন করে জানিয়ে সাবধান করে দেয় তার স্বামীকে।

তার স্বামী বিমানবাহিনীর বহিষ্কৃত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শেখ মাহমুদুল হাসান, যার রনি ও সজিব দুইটি ডাক নাম আছে। সে বর্তমানে নভো এয়ারলাইন্সের ট্রেইনি পাইলট হিসাবে কর্মরত। সবাই তাকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ নামেই চিনে। যার নামে চট্টগ্রামে মাজার ডাকাতির মামলা চলছে।

আমার বোন এতো স্মার্ট নয় যে খোঁচাখুঁচি করে, কারও পিছনে পিছনে ফলো করে ছবিগুলো কালেক্ট করবে। ওর ভাগ্য ভালো নাকি খারাপ জানি না, মাহমুদের সাথে যেই মেয়ের প্রেম হয়, সেই মেয়েগুলোকে ছেড়ে যখন সে অন্য মেয়ের কাছে চলে যায় তখন ওই মেয়েগুলো এসে আমার বোনের কাছে ছবি ও অন্যান্য প্রমাণ দিয়ে যায়। আমার বোনকে প্রতি রাতে জোর করে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিত, যাতে সে রাতভর মেয়েদের সাথে প্রেম করতে পারে। আর আমার বোন মার খাওয়ার ভয়ে চুপচাপ খেয়ে ফেলতো।

আচ্ছা, সে প্রেম করবে করুক, দশটা মেয়ের সাথে সেক্স করবে করুক, আমার বোনকে ছেড়ে দিক। সম্পত্তির লোভ তার এতোই যে, একটা এতিম মেয়েকে দিনের পর দিন এইভাবে মারধোর করে রাখতে হবে? যেই মেয়ে অন্ধের মতো যাকে ভালোবেসে সংসার করার জন্য পড়ে আছে, যার কুকীর্তি ঢাকার জন্য নিজের বোন- সহ পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রেখেছিল দীর্ঘ ছয় বছর! হ্যাঁ, দোষ আমার বোনের যে, তাদের একমাত্র সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সন্তানের বাবাকে বার বার মাফ করে দিচ্ছিল। হ্যাঁ, অনেক বড় অন্যায় করে তারা-ই যারা অন্যায়কে দিনের পর দিন প্রশ্রয় দেয়।

এবার তো এই মেয়েই (হিজাব পরা) বাসায় এসে আমার বোনের কাছে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি ও অনলাইন সেক্স চ্যাট দেখিয়ে প্রমাণ দিতে চাইলো তাদের মধ্যে গভীর প্রেম, আমার বোন যাতে তার স্বামীকে ছেড়ে চলে যায়, নির্লজ্জের মতো কেন পড়ে আছে স্বামীর সংসারে। এই নিয়ে প্রশ্ন করাতে মাহমুদ আবারো শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং সাথে হুমকিও দেয়, 'থাকতে হলে তানিয়াকে (আমার বোন) এইভাবেই থাকতে হবে'। এরপর থেকে তানিয়ার সামনে বসে বসেই মাহমুদ তাদের প্রেমলীলা চালিয়ে যায়।

মাহমুদ আমার বোনের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে যে ক্ষতি করেছে, তার ক্ষতিপূরণ সে সারা জীবনেও দিতে পারবে না, শুধু আশা করছি তানিয়া যেন সুবিচার পায়।

আর সাথে মেয়েদেরও বলছি, বৈমানিক বা ভালো চাকরি করছে বা মিষ্টি কথা বলছে এমন কাউকে দেখলেই লাফিয়ে পড়তে হয় না, আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান। সম্মান আপনারই থাকবে।''

প্রিয়তির ফেসবুক থেকে সংগৃহীত। 

 

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ